আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ঠিক এক সপ্তাহ আগে প্রতিরক্ষা এবং নিরাপত্তা ক্ষেত্রে সে দেশের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে বসছে ভারত। যেখানে গুরুত্ব পাবে লাদাম সীমান্ত নিয়ে চীনের সঙ্গে ভারতের উত্তেজনার বিষয়টি।
আজ মঙ্গলবার দুই দেশের পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী পর্যায়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। খবর আনন্দবাজারের।
এর আগে নয়াদিল্লি পৌঁছান যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এবং প্রতিরক্ষাসচিব মার্ক এস্পার। ‘টু প্লাস টু’ কাঠামোয় তাদের সঙ্গে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহের বৈঠক হবে। পাশাপাশি তারা দেখা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গেও।
ভারতের গণমাধ্যম বলছে, এই সফরের মূল উদ্দেশ্য ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে রণকৌশলগত সম্পর্ক আরও গভীর করা। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে উদার এবং উন্মুক্ত নীতি তৈরি করা। সেখানে বাণিজ্যিক এবং কৌশলগত ক্ষেত্রে গত কয়েক বছর ধরে চিনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবকে রুখতে চাইছে আমেরিকা, ভারত, অস্ট্রেলিয়া, জাপানসহ পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশ। আগামীকালের বৈঠক সেই লক্ষ্যে এক ধাপ এগোনো বলেই মনে করছে বিদেশমন্ত্রক সূত্র।
বৈঠকে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত ‘বেসিক এক্সচেঞ্জ অ্যান্ড কোঅপারেশন এগ্রিমেন্ট’ (বিইসিএ) নামে একটি নতুন চুক্তি হতে পারে। এই সফরে চুক্তিটি চূড়ান্ত করার চেষ্টা চলছে। এই চুক্তির ফলে আমেরিকার নজরদার স্যাটেলাইটগুলোর মাধ্যমে প্রাপ্ত গোয়েন্দা তথ্যের হালহদিশ পাবে ভারত। এর ফলে উচ্চপ্রযুক্তির ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোনের মতো স্বয়ংক্রিয় সরঞ্জামের ব্যবহার আরও নিখুঁত করা যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
ভারতের সঙ্গে বৈঠক সেরে শ্রীলঙ্কা, মলদ্বীপ, এবং ইন্দোনেশিয়াতেও যাবেন আমেরিকার শীর্ষ দুই কর্মকর্তা।
পম্পেও জানান, ‘সহযোগী দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা এবং মত বিনিময়ের জন্য আমরা উন্মুখ হয়ে রয়েছি। স্বাধীন, সমৃদ্ধ এবং শক্তিশালী দেশগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে উন্মুক্ত ও উদার ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল গড়ে তোলাটাই আমাদের লক্ষ্য।’
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রের বক্তব্য, পূর্ব লাদাখে যখন চীনের সঙ্গে স্নায়ুর লড়াই চলছে, তখন আমেরিকার সঙ্গে এই সামরিক বৈঠক অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। যে চারটি বিষয় নিয়ে দু’দেশের কর্তারা কাল টেবিলে বসতে চলেছেন, তার সব কটিই চীনের উপর চাপ বাড়াবে। এই আলোচনা ভারত-চীন সম্পর্কে কী ছাপ ফেলে, এবার সেটাও দেখতে চাইছেন সাউথ ব্লকের কর্তারা।