চট্টগ্রামের দিলীপ নাথ নিউইয়র্কে কাউন্সিলর পদে লড়ছেন

মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

 

 

২০৫ বার দেখা হয়েছে

নিউইয়র্ক নগরের ডিস্ট্রিক্ট ২৪ নির্বাচনী আসনে জিতে প্রথম দক্ষিণ এশীয় সিটি কাউন্সিল মেম্বার হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী বাংলাদেশি মার্কিন দিলীপ নাথ।

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের এই কৃতি সন্তান দিলীপ নাথ নিউ আমেরিকান ভোটার অ্যাসোসিয়েশন পলিটিক্যাল অ্যাকশন কমিটির একজন সভাপতি, কমিউনিটি বোর্ডের ৮নং সদস্য, সুনি ডাউন স্টেটের অন্তর্বর্তীকালীন সহসভাপতি এবং প্রধান তথ্য কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করছেন। আগামী বছরের ২ ফেব্রুয়ারি ডিস্ট্রিক্ট ২৪ আসনে সিটি কাউন্সিলম্যান পদে বিশেষ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন তিনি।

ডেমোক্র্যাট সমর্থক দিলীপ নাথ ১৬ বছর বয়সে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দেন। সাবেক কাউন্সিলম্যান ররি ল্যানকম্যান (ডি-ফ্রেশ ম্যাডোস) গভর্নর অফিসে রেটপেয়ার সুরক্ষায় বিশেষ পরামর্শদাতা হিসেবে নতুন কাজে যোগ দিতে আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করায় আসনটি শূন্য হয়। এতে লড়াইয়ে তৈরি হচ্ছেন দিলীপ। এই আসনে বিজয়ী প্রার্থী আগামী বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন।

নির্বাচনে এটি দিলীপ নাথের লড়াই। এর আগে ২০০৫ সালে প্রথম নির্বাচনে তিনি জেমস গেনারোর কাছে হেরেছিলেন। দুজন আবার মুখোমুখি হচ্ছেন এবার।

আসনটি পেতে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবহন—এই তিনটি মূল বিষয়কে প্রাধান্য দিয়েছেন দিলীপ। ডিস্ট্রিক্ট ২৬ কমিউনিটি এডুকেশন কাউন্সিলের সদস্য ও পিটিএর সাবেক সভাপতি দিলীপ বলেন, দিনের শেষে শিশুদের শিক্ষিত করা আমার প্রথম অগ্রাধিকার।

ইউনাইটেড ফেডারেশন অফ টিচার্সের চ্যান্সেলর রিচার্ড ক্যারেঞ্জা ধারাবাহিকভাবে সঠিক নেতৃত্ব দিতে পারেননি বলে সমালোচনা করে দিলীপ বলেন, ‘চ্যান্সেলর ১.১ মিলিয়ন শিশুকে শিক্ষা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন।’ তিনি বলেন, শিক্ষাক্ষেত্রে একের পর এক পরিবর্তন বাবা–মায়ের জন্য অতিরিক্ত উদ্বেগ তৈরি করছে। ভয়ানক এই সময়ে নতুন শিক্ষা পদ্ধতির মাধ্যমে শিশুদের সফল করতে প্রয়োজনীয় সব প্রযুক্তি দিয়ে শিক্ষার্থীদের সজ্জিত করা উচিত। দিলীপ নাথ পুরো নগরের বিশেষ করে কুইন্সে আরও বেশি বিশেষায়িত উচ্চ বিদ্যালয় গড়ে তুলতে কাজ করতে চান। তিনি মনে করেন, বরোগুলোতে অতিরিক্ত বিশেষায়িত স্কুল তৈরি করলে পুরো নগরের শিক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত সুযোগ তৈরি হবে।

কুইন্সে পরিবহন যানজট নিয়ে এই বাংলাদেশি মার্কিন বলেন, কুইন্সে বাস ও পাতাল রেল সীমিত। তাই যাত্রীদের গাড়ির ওপর বেশি নির্ভর করতে হয় যা যানজটের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, এতে দূষণও বাড়ছে। এর সমাধানে তিনি সব পাবলিক পরিবহন বিনা মূল্যে করতে চান। যানজট এড়াতে কুইন্সের বেশ কিছু অংশে বাড়তি রুটের প্রয়োজন। সুরক্ষিত বাইক লেনগুলো প্রসারিত করাও দরকার বলে তিনি মনে করেন। দিলীপ নাথ পুরো ক্যারিয়ার স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় ব্যয় করেছেন। তিনি বলেন, ‘মহামারি সময়কাল ছাড়াও আমরা স্বাস্থ্যসেবা সরবরাহে যথেষ্ট পরিমাণে সরঞ্জাম ও প্রযুক্তির ব্যবহার করছি না।’

বিলম্বিত চিকিৎসা সেবার কারণে কিংবা চিকিৎসাহীন কোভিড-১৯ রোগীদের ভাইরাসের পাশাপাশি নিউমোনিয়া হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই লোকজন যেন ‌ সঠিক সময়ে দ্রুত চিকিৎসা সেবা পান, সে ক্ষেত্রে তিনি টেলিহেলথ ক্লিনিকগুলোর সংখ্যা বাড়ানোর পরামর্শ দেন।

স্বাস্থ্যসেবায় প্রবীণ নাগরিকদের যত্ন নেওয়াকে দিলীপ অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘অনেক সিনিয়র নাগরিক একা মারা গেছেন এবং পরিবার তাদের সঙ্গে থাকতে পারেননি।’

হাসপাতাল ও নার্সিংহোমের বাইরের পরিবারের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের জন্য সিনিয়রদের প্রযুক্তি সরবরাহের পাশাপাশি অবসর নেওয়ার পর প্রত্যেকের জন্য এস্টেট প্ল্যানিং পরিষেবাগুলোতে অ্যাকসেস দেবেন বলে জানান নাথ। তিনি বলেন, ‘আমাদের নেতৃত্বের খুব দরকার। আমাদের এমন এক নেতাকে দরকার যিনি বিষয়গুলোকে সামনে এগিয়ে নেবেন।’

দুই ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে দিলীপ নাথের সংসার। ১৬ বছর বয়সে আমেরিকায় এসে এখানে এমবিএ করেন। পিএইচডি করেছেন। প্রথমে এসে কষ্টের কাজ করলেও ২৫ বছর ধরে পাবলিক সেক্টরে কাজ করছেন। বর্তমানে নিউইয়র্ক স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।

আরো পড়ুন