ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় ভূয়া কাগজপত্র তৈরির মাধ্যমে টাকা উত্তোলন চেষ্টার ঘটনায় এক চেয়ারম্যানসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বুধবার (৪ নভেম্বর) মহানগর হাকিম আবু সালেহ মোহাম্মদ নোমানের আদালতে এই মামলা দায়ের করেন শাহীদুল ইসলাম চৌধুরী নামে এক ভূক্তভোগী। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) তদন্ত করার আদেশ দেন।
মামলার আসামীরা হলেন, মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক, পিতা-মরহুম হাজী আব্দুল হক, সাইফুল ইসলাম,পিতা তাহের আহাম্মদ, মোঃ ইউসুফ,পিতা-খাইর আহাম্মদ, ১ নং চালক্ষ্যা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী।
আদালত সুত্রে জানা গেছে, মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহনের ক্ষতি পূরণের টাকা উত্তোলন করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়ে টাকা উত্তোলন করেন বাদী শাহীদুল ইসলাম চৌধুরী। টাকা উত্তোলনের চার মাস পর গত ১২ অক্টোবর ভূমি অধিগ্রহন শাখা হতে তার বরাবর একটি চিঠি ইস্যু করা হয় যেখানে ১ নং আসামি মুজাম্মেল হক একটি আপত্তি পত্র দাখিল করে। একটি ভূয়া চুক্তিপত্র তৈরী করে বাদীর কাছে টাকা পাওয়ার দাবী করা হয়।
চুক্তিপত্রে চরলক্ষ্যা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলীর কাউন্টার স্বাক্ষর এবং সিল রয়েছে। একই চুক্তিপত্রে সাইফুল ইসলাম এবং মোহাম্মদ ইউছুপ নামের দুইজন সাক্ষী রাখা হয়েছে।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী সাবেক পিপি এ্যাডভোকেট এনামুল হক বলেন, ভূমি অধিগ্রহন শাখার একটি চিহ্নিত প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য মুজাম্মেল। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় একাধিক মামলা হয়েছে। তিনি সম্পূর্ণ ভূয়া একটি চুক্তিপত্র তৈরীর মাধ্যমে শাহীদুল ইসলাম চৌধুরীকে হয়রানী করছেন। আমরা আদালতে প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র উত্থাপন করে মামলা দায়ের করলে আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্ত করার নির্দেশ দেন।
মামলার বাদী শাহীদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল বাস্তবায়নের জন্য সরকার আমার জমি (ডোমখালি মৌজা, বিএস দাগ ৬০১১) অধিগ্রহণ করে। আমি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেওয়ার পর গত ১৮ জুন চট্টগ্রাম ভূমি অধিগ্রহন শাখা হতে ক্ষতিপূরণের চেক পায়ে ২৩ জুন টাকা উত্তোলন করি। টাকা উত্তোলনের প্রায় চারমাস পর গত ১২ অক্টোবর ভূমি অধিগ্রহন শাখা হতে আমার কাছে একটি নোটিশ জারি করা হয় যেখানে আমার টাকা উত্তোলন বিষয়ে মুজাম্মেল হক নামের অপরিচিত এক ব্যক্তির আপত্তির বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। আমি শুনানীতে অংশগ্রহন করলে আপত্তি প্রদানকারী ব্যক্তি অংশগ্রহন করেননি।
বাদী বলেন, শুনানিতে আমি জানতে পারি মুজাম্মেল হক আমার স্বাক্ষর জাল করে একটি ভূয়া চুক্তিপত্র তৈরী করে আমার কাছে ৫০ লক্ষ টাকা পাবে দাবী করে। চুক্তিপত্রে অচেনা দুইজন ব্যক্তিকে স্বাক্ষি হিসেবে রাখা হয় এবং একজন চেয়ারম্যান কাউন্টার সাক্ষর করেন। ২৯ অক্টোবর তার অংশগ্রহন না করার বিষয়টি উল্লেখ করে ভূমি অধিগ্রহন কর্মকর্তা মোহাম্মদ কায়সার খসরু একটি চিঠিও ইস্যু করেন ।
তিনি আরো বলেন, স্বাক্ষর জালিয়তি করে প্রতারণার বিষয়টি উল্লেখ করে আমি গত ১ নভেম্বর জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এবং অধিগ্রহণ কর্মকর্তাকে প্রতারক মুজাম্মেল হকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার বিষয়টি অবহিত করি। সবশেষ আজকে (৪ নভেম্বর) আমি প্রতারক মুজাম্মেলসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করি।