নিউইয়র্কে জিয়াউর রহমানের অনুষ্ঠান নিয়ে কাদা ছোড়াছুড়ি

সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

 

 

২২৭ বার দেখা হয়েছে

দফা বক্তা পরিবর্তন হলেও শেষ পর্যন্ত অনুষ্ঠানের মূল উদ্যোক্তাকেই বক্তব্য না দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আবার অনুষ্ঠানে আমন্ত্রনপত্র না পাওয়ায় অপর পক্ষ ৩০ জানুয়ারির ভার্চুয়াল অনুষ্ঠান আয়োজন কারীদের বিরুদ্ধে বিষদগার করে পোষ্টার ছাপিয়েছেন। একই সাথে তারা আয়োজকদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
অভিযোগ কারী অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা ও যুক্তরাষ্ট্র জাতীয়তাবাদী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন বলেন, আমরা এই অনুষ্ঠানকে বাস্তবায়ন করার জন্য বিগত একমাস ধরে পরিশ্রম করেছি। অথচ আমি নিজেই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে পারিনি। তিনি আরো অভিযোগ করেন অনুষ্ঠানের বক্তা ড. অধ্যাপক জসিম উদ্দিনকে ষড়যন্ত্র করে ভার্চুয়াল অনুষ্ঠান থেকে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়।
অভিযোগে আরো জানা যায়, এই অনুষ্ঠান করার আগে প্রোগ্রামের নাম দেয়া হয় ‘জিয়াউর রহমান গবেষনা পরিষদ যুক্তরাষ্ট্র শাখা’। পরে অদৃশ্য ইঙ্গিতে অনুষ্ঠানের নাম বদলে যায়। নাসাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জীবন কর্ম আদর্শ ও দেশাত্ববোধ ছড়িয়ে দেয়ার প্রত্যয়ে সদ্য গঠিত সংগঠনের অনুষ্ঠান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতা কর্মীদের মধ্যে কাদা ছোড়াছুড়ি এবং গ্রুপিং চলছে। নতুন গঠিত ‘জিয়াউর রহমান স্টাডি সার্কেল নিউইয়র্ক’ সংগঠনের ভার্চুয়াল অনুষ্ঠান করার আগে কয়েকম দেয়া হয় ‘জিয়াউর রহমান স্টাডি সার্কেল নিউইয়কর্’। অনুষ্ঠানটি বিএনপি ঘরানার পেশাজীবি, বুদ্ধিজীবি এবং সাংবাদিকদের অতিথি করে সাজানো হয় এবং যুক্তরাস্ট্র বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত কারো নাম অর্ন্তভূক্ত না করার সিদ্ধান্ত হয়। সেই অনুযায়ি পোষ্টার ছাপানো হয়। এতে আলোচক ছিলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. অধ্যাপক জসিম উদ্দিন আহমেদ, ইতিহাস, সমাজ ও রাজনৈতিক পর্যালোচক ড. তাজ হাসমী, চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর ড. মাহবুব উল্যাহ, কলামিষ্ট ও মানবাধিকার কর্মী ড. আবিদ বাহার, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন সভাপতি এম আবদুল্লাহ, জাতীয় প্রেসক্লাব সেক্রেটারি ইলিয়াস খান, সিনিয়র সাংবাদিক মাঈনুদ্দিন নাসের, ভাসানী ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক আলী ইমাম শিকদার। কেন্দ্রীয় বিএনপির নেতাদের মধ্যে ছিলেন এডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, আনোয়ার হোসেন খোকন, সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকু, রিটা রহমান, এডভোকেট কাজী কামরুল ইসলাম সজল ও ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন। এই পোষ্টারটি ছাপানোর পর যখন সামাজিক মাধ্যমে দেয়া হয় তখন পরিস্থিতি অন্য দিকে মোড় নেয়। শুরু হয়ে যায় পোষ্টারে নাম রাখা নিয়ে লবিং গ্রুপিং।
এর কিছুদিন পর অদৃশ্য হাতের ইশারায় পোষ্টারে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি নেতাদের নাম সংযুক্ত করা হয়। এরা হলেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান জিল্লু ও অপর নেতা মিজানুর রহমান ভূঁইয়া। পোষ্টারে সভাপতিত্ব করবেন মূলধারার রাজনীতিবিদ গিয়াস আহমেদ ও প্রধান সমন্বয়কের নাম দেয়া হয় যুক্তরাষ্ট্র যুবদলের সভাপতি জাকির এইচ চৌধুরীকে।
বিএনপি নেতা জিল্লু এবং মিল্টনের নাম দিয়ে পোষ্টার ছাপানোর পর অনুষ্ঠান ঘনিয়ে আসলে বক্তা হিসাবে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কয়েক ডজন নেতার নাম যুক্ত করে আরো একটি পোষ্টার ছাপানো হয়। এবার শুরু হয় কাদা ছোড়াছুড়ি এবং গ্রুপিং। পরবর্তী পোষ্টারে অনুষ্ঠানের প্রধান সমন্বয়ক যুবদলের সভাপতি জাকির এইচ চৌধুরির নাম ছাড়াই অন্য আরেকটি পোষ্টার ছাপানো হয়।
আরেকটি পক্ষ অনুষ্ঠানের সভাপতি গিয়াস আহমেদ ও সঞ্চালক মোঃ কাসেমের বিরুদ্ধে বিষদগার করে সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে ষ্টেটাস দেন। এ নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের মধ্যে তুমুল বাগবিতন্ডা ও কাদা ছোড়াছুড়ি চলছে।
এ সব কারনে ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে অনেক বক্তাই যোগদান করেননি।
বিএনপি নেতা শরাফত হোসেন বাবু কাদা ছোড়াছুড়ি প্রসঙ্গে বলেন, একটি অনুষ্ঠানের আটবার পোষ্টার ছাপানো হয়েছে এবং অনুষ্ঠানের একজন উদ্যোক্ততা তিনি আওয়ামী ঘরোনার মানুষ আমাদের কাছে প্রমান আছে। তাই এই ধরনের অনুষ্ঠান বয়কট করেছি।
অনুষ্ঠানের প্রধান সমন্বয়ক থেকে বাদ পড়া যুবদল সভাপতি জাকির এইচ চৌধুরী বলেন, অনুষ্ঠানের সঞ্চালক কাশেম আমাকে সমন্বয়ক বানিয়েছিলেন। পরে অজ্ঞাত কারণে আমার নাম পোষ্টার থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। বিষয়টিকে আমি অভ্যন্তরীন ষড়যন্ত্র হিসাবে দেখছি।
জিল্লুর রহমান বলেন, আমার শরীর খারাপ থাকায় আমি ভার্চুয়ালে যোগ দিতে পারিনি।
জাসাস নেতা গোলাম ফারুক শাহিন বলেন, একটা অনুষ্ঠান হলে সেখানে অনেক রকমের সমস্যা আসে। তবে অনুষ্ঠান মূল বিষয় ছিল অসাধারণ।
অনুষ্ঠানের সঞ্চালক যুবদল নেতা মোঃ কাসেম বলেন, উদ্যোক্ততা বা অতিথি কেউ বক্তব্য রাখতে পারেনি তা আমার জানা নেই। এই অনুষ্ঠানের একজন উদ্যোক্ততা ছিলেন বিএনপি নেতা মোতাহার হোসেন এবং সঞ্চালক হিসাবে তিনি কারো সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেননি বলে দাবী করেন।
অনুষ্ঠানের সভাপতি মুলধারার রাজনীতিবিদ গিয়াস আহমেদ বলেন, প্রথমে অনুষ্ঠানটিকে পেশাজীবি, বুদ্ধিজীবি এবং সাংবাদিকদের বক্তা করে সাজানো হয়েছিল। পরে দলীয় লোকজনের আগ্রহের চাপে সবাইকে অর্ন্তভূক্ত করা হয়েছে। সভাপতি হিসাবে অন্যদের সুযোগ করে দেয়ায় আমি নিজেও বক্তব্য রাখতে পারিনি। এখানে অভিযোগ করার মতো কোন ঘটনা ঘটেনি। তিনি আরো বলেন, ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানটি অত্যন্ত সফল হয়েছে। বিভিন্ন পেশার ৩৫ টি দেশের মানুষ ভার্চুয়াল মিটিংয়ে অংশ নিয়েছেন এবং নব গঠিত সংগঠনটিকে একটি পূর্ণাঙ্গ রুপ দেয়ার প্রস্তুতি চলছে। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কাদা ছোড়াছুড়ির বিষয়টি তিনি জানেন না বলে জানান।

আরো পড়ুন