মিরসরাই পৌরসদরে উদ্বোধনের অপেক্ষায় ১০ শয্যার পৌর সদর মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র। হাসপাতালটি চালু হলে চিকিৎসা সেবা পাবে মিরসরাই পৌর এলাকার প্রায় ২৬ হাজার জনগণ। এরই মধ্যে ৪ কোটি ৫৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ভবনসহ অধিকাংশ স্থাপনা তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। স্থাপনা বুঝিয়ে দেওয়ার পর লোকবল নিয়োগ শুরু হবে।
এই প্রতিষ্ঠানটি নির্মাণ করে পৌর বাসীকে দেওয়া কথা রাখলেন মিরসরাই পৌরসভার মেয়র ও পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে পৌরবাসীর মা ও শিশুর চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে পৌর সদরে একটি হাসপাতালে দাবি জানিয়ে আসছিলেন পৌরবাসী। গত পৌরসভা নির্বাচনে বর্তমান মেয়র মোঃ গিয়াস উদ্দিন পৌর সদরে একটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার করেন। পৌর সদরে ১০ শয্যার মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে মেয়র তার নির্বাচনী অঙ্গীকার পূরণ করলেন।
১৯৮০ সালে মিরসরাই সদর ইউনিয়নের বাসিন্দাদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে উপজেলা সদরে প্রতিষ্ঠিত হয় ইউনিয়ন স্বাস্থ্য উপকেন্দ্র। ওই কেন্দ্রে সদর ইউনিয়নের প্রায় ১৫ হাজার মানুষ বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসাসেবা নিতেন। ২০০০ সালে সদর ইউনিয়নের কিছু অংশ নিয়ে গঠন করা হয় মিরসরাই পৌরসভা। ইউনিয়ন স্বাস্থ্য উপকেন্দ্রটিও পৌরসভা অংশে পড়ে যায়। এরপর ডাক্তার সংকট, ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়া, প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র না থাকায় কিছুদিন স্বাস্থ্য উপকেন্দ্রটির কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে।
মিরসরাই পৌরসভার মেয়র মোঃ গিয়াস উদ্দিন জানান, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য উপকেন্দ্রের কার্যক্রম স্থবির হয়ে থাকার কারণে একটি চক্র কেন্দ্রটির সরকারি জায়গা দখল করে নেওয়ার চেষ্টা চালায়। কিন্তু কর্তৃপক্ষ দখলদারদের বিরুদ্ধে লড়াই করে জায়গাগুলো রক্ষা করে। তিনি জানান, মিরসরাই পৌরসভায় ভাসমান লোকসহ প্রায় ২৬ হাজার লোকের বসবাস। তাদের সরকারিভাবে স্বাস্থ্যসেবা নেওয়ার জন্য পৌর সদরে কোনো হাসপাতাল নেই। তাই মিরসরাইয়ের সংসদ সদস্য, সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের আন্তরিকতায় এখানে পৌরবাসীর জন্য ১০ শয্যাবিশিষ্ট একটি মা শিশু কল্যাণ কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। কেন্দ্রটির কাজও প্রায় শেষ। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে ভবন বুঝিয়ে দেওয়ার পর, লোকবল নিয়োগ দেওয়া হবে। লোকবল নিয়োগ হয়ে গেলে স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি উদ্বোধন করা হবে।
হাসপাতাল নির্মাণ কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রমিনেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন জানান, তারা চার কোটি ৫৩ লাখ টাকা ব্যয়ে হাসপাতালটির নির্মাণকাজ পেয়েছিলেন। দুই মাস আগে দোতলা হাসপাতাল ভবন, দোতলা আবাসিক ভবন, নিরাপত্তা ফটক, সীমানা প্রাচীরের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। শীঘ্রই স্বাস্থ্য বিভাগকে নতুন ভবন বুঝিয়ে দেওয়া হবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মিজানুর রহমান জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের ভবনসহ স্থাপনাগুলো এখনও স্বাস্থ্য বিভাগকে বুঝিয়ে দেয়নি। বুঝিয়ে দেওয়ার পর লোক নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে। তবে ওই ভবনের নিচতলায় আগের মতো ইউনিয়ন স্বাস্থ্য উপকেন্দ্রে একজন মেডিকেল অফিসার ও একজন সহকারী স্থানীয়দের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের কার্যক্রম চালু হওয়ার পরও তা চালু থাকবে বলে জানান তিনি।