যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ড. অ্যান্থনি ফসি জানিয়েছেন, করোনার সংকট কাটিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে ২০২২ সাল লেগে যেতে পারে। ভ্যাকসিন এলেই যে সব রাতারাতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে, তা তিনি মনে করেন না।
বিশ্বখ্যাত পরিসংখ্যান সাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য অনুযায়ী, আজ শুক্রবার সকাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে করোনা আক্রান্ত বেড়ে হয়েছে ৯২ লক্ষ ১২ হাজার ৭৬৭ জন। মৃত্যু হয়েছে দুই লাখ ৩৪ হাজার ১৭৭ জনের। এখন চিকিৎসাধীন রয়েছেন ২৯ লাখ ৯৫ হাজার ২৪৫ জন।
ঠিক যখন দেশটির করোনা পরিস্থিতির চিত্র এমন তখনই এ ধরণের মন্তব্য করলেন ফসি।
অস্ট্রেলিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন আলোচনায় ফসি বলেন, ‘২০২১ সালের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মার্কিনিকে ভ্যাকসিন দেওয়া গেলে ওই বছরের শেষ নাগাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থার দিকে যেতে পারে।
ফসি আরো বলেন, ‘হতে পারে নতুন ইংরেজি বছরে পা দেওয়ার আগেই আমরা প্রাণঘাতী ভাইরাসের ভ্যাকসিন পেয়ে যাব। প্রথম পর্যায়ে কাদের ভ্যাকসিন দেওয়া হবে, সে প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু, ভ্যাকসিন এলেই যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে, গোটা বিশ্ব আবার আগের অবস্থায় ফিরে যাবে, ব্যাপারটা এত সহজ হবে না।’
ড. ফসির কথায়, ‘কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন কয়েক মাসের মধ্যে চলে আসবে ঠিকই। কিন্তু, জীবন স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে আগামী বছরের শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্ক ফসি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে মাস্ক পরা রাজনৈতিক ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। মাস্ক নিয়ে অযথা রাজনীতি বন্ধ হওয়া উচিত। রাজনৈতিক রং বিবেচনা করে, মাস্ক পরা নিয়ে লোকজনকে উপহাস করা হচ্ছে।’
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটার নিয়মিত পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৯১ হাজার ৫৩০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এতে করে সংক্রমিতের সংখ্যা বেড়ে ৯২ লাখ ১২ হাজার ৭৬৭ জনে দাঁড়িয়েছে। নতুন করে প্রাণ হারিয়েছেন ১ হাজার ৪৭ জন। এ নিয়ে প্রাণহানি বেড়ে ২ লাখ ৩৪ হাজার ১৭৭ জনে ঠেকেছে।
অপরদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনামুক্ত হয়েছেন ৫০ হাজারের বেশি ভুক্তভোগী। এতে করে সুস্থতার সংখ্যা ৫৯ লাখ ৮৩ হাজার অতিক্রম করেছে।
চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি শিকাগোর এক বাসিন্দার মধ্যে প্রথম করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়। এরপর থেকে ক্রমান্বয়ে ভয়ানক হতে থাকে পরিস্থিতি।
যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের ধারণা ইতোমধ্যে তাদের দেশের অন্তত ২০ মিলিয়ন (দুই কোটি) মানুষ করোনার শিকার হয়েছেন। দ্য সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল (সিডিসি) বলছে, ‘প্রকৃত তথ্য হলো, প্রকাশিত সংখ্যার অন্তত ১০ গুণ বেশি মানুষ করোনার ভয়াবহতার শিকার।’