সাবসিডিয়ারি কোম্পানিকে একীভূত করে নিল রেনাটা

সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

 

 

১৪৯ বার দেখা হয়েছে

সাবসিডিয়ারি কোম্পানি রেনাটা অনকোলজিকে একীভূত করে নিয়েছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ওষুধ খাতের কোম্পানি রেনাটা লিমিটেড। উচ্চ আদালতের অনুমোদনের ভিত্তিতে এরই মধ্যে একীভূতকরণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে রেনাটা। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে দেয়া তথ্যানুসারে এ বছরের ১৯ জুলাই সাবসিডিয়ারি কোম্পানিকে একীভূতকরণে উচ্চ আদালত থেকে অনুমোদন পায় রেনাটা লিমিটেড। একীভূতকরণ স্কিম অনুযায়ী, রেনাটা অনকোলজি লিমিটেডের প্রতিটি শেয়ারের বিপরীতে রেনাটা লিমিটেডের দশমিক শূন্য ২টি শেয়ার পেয়েছে কোম্পানিটির শেয়ারহোল্ডাররা। দুই কোম্পানির নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে গেল বছরের ৩০ জুনের শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্যের (এনএভিপিএস) ভিত্তিতে এ সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়েছে।

গত বছরের অক্টোবরে সাবসিডিয়ারি কোম্পানি রেনাটা অনকোলজিকে একীভূতকরণের সিদ্ধান্ত নেয় রেনাটা লিমিটেডের পর্ষদ। একই বছরের ১ ডিসেম্বর উচ্চ আদালত একীভূতকরণ স্কিম অনুমোদন দেন এবং বিশেষ সাধারণ সভায় (ইজিএম) শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন নেয়ার আদেশ দেন। এ বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি ইজিএমে একীভূতকরণ স্কিমে শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন নেয় কোম্পানিটি। একই দিনে একীভূতকরণ স্কিম বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট ঋণদাতাদের কাছ থেকেও অনুমোদন নেয় রেনাটা। তাছাড়া একীভূতকরণের ক্ষেত্রে রেনাটা অনকোলজির মাইনরিটি শেয়ারহোল্ডারদের কম্পেনসেশন নগদ অর্থে পরিশোধ করে রেনাটা।

৩০ জুন সমাপ্ত ২০১৯ হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের মোট ১১০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে রেনাটা লিমিটেড। এর মধ্যে ১০০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ। আর বাকি ১০ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ। নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির সম্মিলিত নিট মুনাফা হয়েছে ৩৭৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৩১০ কোটি ৬০ লাখ টাকা। এ সময়ে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে সম্মিলিতভাবে ৪৬ টাকা ৬৩ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৩৮ টাকা ৫৭ পয়সা। ৩০ জুন কোম্পানিটির এনএভিপিএস দাঁড়ায় সম্মিলিতভাবে ২৩০ টাকা ৯০ পয়সা।

সর্বশেষ ৩০ জুন সমাপ্ত ২০২০ হিসাব বছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) ১ হাজার ৯০৯ কোটি টাকার ওষুধ বিক্রি করেছে রেনাটা। যেখানে এর আগের বছরের একই সময়ে বিক্রি ছিল ১ হাজার ৫৫২ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির বিক্রি বেড়েছে ২৩ শতাংশ। এর মধ্যে ২৫৪ কোটি টাকা চুক্তিভিত্তিক উৎপাদন ও বিদেশে রফতানির মাধ্যমে আয় হয়েছে। সর্বশেষ সমাপ্ত হিসাব বছরের প্রথম নয় মাসে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী সমন্বিত মুনাফা হয়েছে ৩০৬ কোটি টাকা। এর আগের বছরের একই সময়ে মুনাফা ছিল ২৫৩ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির মুনাফা বেড়েছে প্রায় ২১ শতাংশ।

১৯৭৯ সালে পুঁজিবাজারে আসা রেনাটা লিমিটেড ১৯৭২ সালে মার্কিন ওষুধ জায়ান্ট ফাইজারের একটি কোম্পানি হিসেবে বাংলাদেশে যাত্রা করে। ১৯৯৩ সালে ফাইজার স্থানীয় শেয়ারহোল্ডারদের কাছে তাদের মালিকানা বিক্রি করে চলে যায় এবং কোম্পানির নাম ফাইজার (বাংলাদেশ) লিমিটেডের বদলে হয় রেনাটা লিমিটেড। বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কোম্পানিটির ওষুধ রফতানি হচ্ছে। কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ২৫০ কোটি টাকা। বর্তমানে পরিশোধিত মূলধন ৮৮ কোটি ৫৮ লাখ ৯০ হাজার টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ১ হাজার ৭৭১ কোটি ২৬ লাখ টাকা। কোম্পানিটির মোট শেয়ারের ৫১ দশমিক ১৭ শতাংশ উদ্যোক্তা-পরিচালক, ১৭ দশমিক ৮৯ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী, ২২ দশমিক ৭৬ শতাংশ বিদেশী বিনিয়োগকারী ও বাকি ৮ দশমিক ১৮ শতাংশ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে।

গতকাল ডিএসইতে কোম্পানিটির শেয়ার সর্বশেষ ১ হাজার ১১৪ টাকায় লেনদেন হয়েছে।

আরো পড়ুন