করোনার প্রভাব : নিউইয়র্কে কমেছে বাসা ভাড়া

সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

 

 

৩২১ বার দেখা হয়েছে

নিউইয়র্কে গত কয়েক বছর ধরে দফায় দফায় বাসা ভাড়া বেড়েছে। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দেওয়ার পর বাসা ভাড়া কমছে এই নগরে। এতে বাড়ির মালিকদের মধ্যে কিছুটা হতাশা ও ভাড়াটিয়াদের মধ্যে স্বস্তি দেখা যাচ্ছে।

করোনা পরিস্থিতির কারণে নিউইয়র্কে চাকরির বাজারে ধস নামে। বেকার হয়ে পড়ে অসংখ্য কর্মজীবী। এ অবস্থায় বর্ধিত বাসা ভাড়া দিতে না পেরে নিউইয়র্কের পাঁচ বোরো থেকে প্রায় ১৬ হাজার পরিবার যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য অঙ্গরাজ্যে চলে গেছে। অনেকে এখনো বাসা ভাড়া দিতে পারছেন না। ভাড়াটিয়া সংকটের কারণেই মূলত বাসা ভাড়া কমছে বলে ধারনা করা হচ্ছে।

অন্যদিকে গ্রীষ্ম ও শীতকালে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে পর্যটকেরা এখানে ঘুরতে আসেন। এ সময় এয়ারবিএনবিসহ বিভিন্ন কোম্পানি বিভিন্ন অঞ্চলের অ্যাপার্টমেন্ট ও ব্যক্তি মালিকানাধীন বাড়ি পর্যটকদের জন্য বুকিং দিয়ে থাকেন। হোটেল থেকে আবাসিক বাসাগুলো ভাড়া অনেক কম। এবার অস্থায়ী আবাসিক বাসা ভাড়ার তেমন কোন চাহিদা নেই। কারণ, কোন পর্যটক নেই। এই চাহিদা আগামী বছরগুলোতে যে বাড়বে, সেই সম্ভাবনাও অনেকটা ক্ষীণ। এ কারণে এসব কোম্পানি আবাসিক ভবনের মালিকদের সঙ্গে ভবিষ্যতের জন্য চুক্তি করতেও আগ্রহী নয়। এ কারণে বাসা ভাড়া কমে গেছে।

নিউইয়র্কের পাঁচ বোরোতে করোনা পরিস্থিতির আগেও এক বেডরুমের বাসা ভাড়া ছিল ১ হাজার ৩০০ ডলার থেকে ১ হাজার ৪০০ ডলার। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির মধ্যে এক বেডরুমের বাসা ভাড়া কমে এক হাজার থেকে ১ হাজার ১০০ ডলারে নেমে এসেছে। দুই বেডরুমের বাসা ভাড়া ছিল দুই হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ ডলার। বর্তমানে এই ধরনের বাসা ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ ডলারের মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। তিন বেডরুমের বাসা ছিল ২ হাজার ৫০০ ডলার থেকে ৩ হাজার ডলারের মধ্যে। সেই বাসা ভাড়া এখন দুই হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ ডলারের মধ্যে মিলছে।

তিন মাস ধরে ফেসবুক মার্কেট প্লেস, ক্রেগলিষ্ট ও নিউইয়র্ক থেকে বাংলাদেশি কমিউনিটির পত্রিকাসহ বিভিন্ন দেশের কমিউনিটি সংবাদপত্রের ক্লাসিফায়েড বিভাগের পাতা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, আগের তুলনায় ২০ থেকে ৩০ শতাংশ বাসা ভাড়া কমে গেছে।

বাসা ভাড়া প্রসঙ্গে জ্যাকসন হাইটসের আলাউদ্দিন বলেন, জ্যামাইকার উডহ্যাভেন এলাকায় গত মাসে তিন বেডরুমের বাসায় উঠেছেন। ভাড়া দিতে হচ্ছে ১ হাজার ৫০০ ডলার। করোনা পরিস্থিতির আগে এই বাসার ভাড়া কমপক্ষে দুই হাজার ডলারের বেশি ছিল।

জ্যামাইকার দিদারুল ইসলাম বলেন, এক বেডরুমের বাসা এক হাজার ডলারে ভাড়া পেয়ে তিনি আগের বাসা ছেড়ে দিয়েছেন। নতুন বাসায় উঠেছেন। আগের বাসা থেকে বর্তমানের বাসাটি পরিচ্ছন্ন ও বড়। আগের বাসার দাম ছিল ১ হাজার ৩০০ ডলার।

ব্রুকলিনের রিয়েল স্টেট ব্রোকারেজ জামাল উদ্দিন বলেন, ব্রুকলিন এলাকায় করোনার আগের তুলনায় বাসা ভাড়া বেশ কমেছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে অনেকেই বাসা ভাড়া দিতে পারছেন না। ভালো ও সৎ ভাড়াটিয়া পেলে বাড়ির মালিকেরা ২০০ থেকে ৩০০ ডলার এমনিতে কমিয়ে দিচ্ছেন। কারণ বাসা ভাড়া না পাওয়া থেকে অন্তত মর্টগেজের পেমেন্ট ভাড়াটিয়ার কাছ থেকে মাসে মাসে আসলে বাড়ির মালিকেরা দুশ্চিন্তামুক্ত থাকেন।

আরো পড়ুন