হোমকেয়ারে নতুন নির্দেশনা অমান্য করলে ৯০ দিনের মধ্যে ব্যবস্থা

মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

 

 

৩২১ বার দেখা হয়েছে

নিউইয়র্কের হোমকেয়ার গুলোর উপর স্টেট ডিপার্টমেন্ট অব হেলথ থেকে নতুন নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী রিকুয়েস্ট ফর অপার (আরএফও) তালিকা ভুক্ত না হলে ৯০ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের ইংগিত দিয়েছেন ডিওএইচ। ইতিমধ্যে নিউইয়র্ক স্টেটের ৪২ প্রতিষ্ঠান আরএফও তালিকা ভূক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে বাংলাদেশী মালিকানাধীন দুটি প্রতিষ্ঠান অনুমোদন পেয়েছে। তারমধ্যে এম এন্ড এন হোমকেয়ার একটি। অন্যটির নাম জানা যায়নি। অন্যান্য হোমকেয়ার গুলো তালিকা ভূক্ত হওয়ার জন্য আবেদন করেছেন। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আরএফও তালিকায় আবেদনকারী হোমকেয়ার গুলো স্থান পেয়েছেন কিনা জানা যায়নি।
যারা তালিকায় স্থান পাননি সে সমস্ত হোমকেয়ার গুলোকে তালিকা ভূক্ত হোমকেয়ারের সাথে সমন্বয় করে কাজ করার নির্দেশনা দিয়েছেন স্টেট ডিপার্টমেন্ট অব হেলথ (ডিওএইচ)।
আর যারা আরএফও অনুমতি পাবেন তারাই শুধু সিডিপিএপি(কনজ্যুমার ডাইরেক্ট পারসোনাল এসিস্টেন্ট প্রোগ্রাম) এর জন্য অনুমতি পাবেন। আর যারা অনুমতি পাবেননা তাদের ব্যবসা বন্ধ করতে নির্দেশনা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
২০১৯ সালের ডিওএইচ এর নতুন নির্দেশনা অনুযায়ি প্রত্যেক হোমকেয়ার মালিক গনের জন্য আরএফও তালিকা ভূক্তি থাকতে হবে। এই তালিকা ভূক্তি হওয়ার জন্য ডিওএইচ থেকে সকল হোমকেয়ারের কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চাওয়া হয়। সব হোমকেয়ার গুলো কয়েকটি গ্রুপে এবং ব্যক্তিগত ভাবে কাগজপত্র জমা দেন বলে হোমকেয়ার সূত্রে জানা যায়। এরপরই ৪২ টি হোমকেয়ারের তালিকা প্রকাশ করে ডিওএইচ।
গত মে মাসের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে আরএফও অনুমোদন নেয়ার প্রক্রিয়া শেষ হয়ে গেছে। তবে আরএফও অনুমোদন নেয়ার জন্য আপিল করা যাবে মর্মে স্টেট থেকে একটি চিঠি দেয়া হয়েছে।
আরএফও তালিকা ভূক্ত এম এন্ড এন হোমকেয়ারের ডাইরেক্টর অফ বিজনেস কর্মকর্তা আলতাফ হোসেন জানান, আরএফও অনুমোদন পাওয়া আমাদের হোমকেয়ার ব্যবসার জন্য একটি বড় সাফল্য। আর অনুমতি না পাওয়া হোমকেয়ার গুলো ঝুকিতে আছে। তিনি আরো বলেন, কোন হোমকেয়ার মালিক আমাদের কাছে সহযোগিতা চাইলে আমরা তাদের অবশ্যই সহযোগিতা করব।
আরএফও অনুমোদন প্রসঙ্গে মার্কস হোমকেয়ার কর্মকর্তা আলমাস আলি জানান, স্টেট থেকে একটি প্রেসরিলিজ আমাদের নজরে এসেছে। ছোট ছোট কিছু কোম্পানীর নাম উল্লেখ আছে। বড় বড় কোম্পানীর গুলোর অডিট চলছে, যেহেতু আমরা বড় কোম্পানী তাই একটু সময় বেশী লাগছে। তিনি আশা করেন সবাই অনুমোদন পাবে। এতে কোম্পানী বা গ্রাহকের ভয়ের কিছু নেই।
ইমিগ্রেন্ট এলডার কেয়ারের সিইও গিয়াস আহমেদ বলেন, সিডিপ্যাপ বন্ধ হচ্ছেনা। দুয়েকটি হোমকেয়ার ষড়যন্ত্র করে অন্য হোমকেয়ারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে। আমরা সমন্বিত ভাবে এবং ব্যক্তিগত ভাবে আরএফও’র জন্য আবেদন করেছি। ব্যক্তিগত আরএফও অনুমোদন না হলেও সমষ্ট্রিগত ভাবে ৫ কোম্পানী অনুমোদিত হয়েছে। আমরা যে কারো সাথে অনায়াসে কাজ করতে পারি। এতে করে হোমকেয়ার বা গ্রাহকদের ভয় পাওয়ার কোন কারণ নেই।
বারি হোমকেয়ারের সিইও আসেফ বারি জানান, নিউইয়র্কে হোমকেয়ার এজেন্সীর সংখ্যা প্রায় ৭ শতাধিক। তারমধ্যে মাত্র ৪২ টির নাম এসেছে। বাকি কোম্পানী গুলোর প্রক্রিয়া চলছে। আমরা ডিওএইচ এর চাহিদা অনুযায়ি সব কাগজপত্র জমা দিয়েছি। এতে কারো বিচলিত হওয়ার কারণ নেই। প্রয়োজনে অডিনেন্স ৭৬ ধারায় আইনের আশ্রয় নেওয়া হবে। এ ছাড়া যারা হোমকেয়ার সেবা পাচ্ছেন তাদের সেবাও অব্যাহত থাকবে।
এসেনসিয়াল হোমকেয়ারের সিইও মোহাম্মদ হোসেন ইশতিয়াক জানান, বড় কোম্পানী গুলোর অনুমোদন আসতে কিছুটা দেরী হচ্ছে। অনুমোদন না আসা পর্যন্ত গ্রুপের সাথে হোমকেয়ার সেবা পরিচালনা করা যাবে অনায়াসে। তাই সিডিপ্যাপ গ্রাহকদের এই নিয়ে কোন প্রকার চিন্তা করার কারণ নেই। আর দুয়েকটি হোমকেয়ারের গুজবে কান না দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
এ দিকে একটি সুত্রে জানা গেছে, ডিপার্টমেন্ট অব হেলথ (ডিওএইচ) এর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে খ্যাতনামা কয়েকটি হোমকেয়ার একযোগে মামলা করার প্রস্তুতি নিয়েছে। ইতিমধ্যে মধ্যে তারা নিউইয়র্কের ল’ফার্মের সাথে যোগাযোগ করে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন।
নিউইয়র্কে প্রায় ৭ শতাধিক হোমকেয়ার রয়েছে। এ সব সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে কয়েক লাখ রোগী হোমকেয়ার সেবা পাচ্ছেন। আএফও না থাকলে স্টেট কর্তৃপক্ষ শুধুমাত্র প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবেন। রোগীরা চাইলে তালিকা ভূক্ত অন্য যে কোন হোমকেয়ারের সাথে যুক্ত হয়ে সেবা নিতে পারেন।
অপর দিকে সাউথ এশিয়ান হোমকেয়ার ওনার এসোসিয়েশন সিডিপ্যাপ বন্ধ হওয়ার গুজব ছড়িয়ে দেওয়ার ব্যাপারে একটি চক্রের বিরুদ্ধে সবাইকে সতর্ক থাকা ও গ্রাহকদের ভয় না পাওয়ার ব্যাপারে পরামর্শ দিয়েছেন। সকল মালিকগন ১৬ ফেব্রুয়ারি একটি বৈঠকে মিলিত হন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ইমিগ্র্যান্ট এল্ডার হোম কেয়ারের সিইও গিয়াস আহমেদ, বারী হোম কেয়ারের সিইও আসেফ বারী টুটুল এবং মুনমুন বারী, ডিএইচ কেয়ারের সিইও শাহরিয়ার, গোল্ডেন এজ হোম কেয়ারের প্রেসিডেন্ট শাহ নেওয়াজ, দাদা হোম কেয়ারের সিইও সাঈদ হায়াত, ব্যাঙ্গল হোম কেয়ারের সিইও জামিল মাহমুদ, বাংলা হোম সিইও কেয়ারের আবু জাফর মাহমুদ, ডাইরেক্ট সোর্স হোম কেয়ারে সিইও নাজিম উদ্দিন, সারা হোম কেয়ারের সিইও ডা. শাহজাদী পারভীন ও স্বপ্ন হোম কেয়ারের সিইও মিজবাহ আবেদিন ।

আরো পড়ুন