সৌদির গোপন পরমাণু তৎপরতা, ইরানের তীব্র প্রতিক্রিয়া

মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

 

 

৯৮ বার দেখা হয়েছে

ভিয়েনায় জাতিসংঘের দপ্তরে নিযুক্ত ইরানের স্থায়ী প্রতিনিধি কাজেম গরিবাবাদি বলেছেন, ‘সৌদি আরব যদি পরমাণু বোমা বানানোর পরিকল্পনা করে থাকে কিংবা নিজের গোপন পরমাণু কর্মসূচির ব্যাপারে আইএইএ’কে সহযোগিতা না করার জন্য অজুহাত খুঁজতে থাকে তাহলে তাকে সাহস দেখাতে হবে এবং এর জন্য মূল্য পরিশোধ করতে হবে। 

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে সৌদি পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আদেল আল-জুবায়ের বলেছেন, ‘যদি ইরানের পরমাণু কর্মসূচি বন্ধ করা না হয় তাহলে নিজেকে পরমাণু বোমায় সজ্জিত করার অধিকার সৌদি আরব সংরক্ষণ করবে।’ তার এ বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়েই মূলত ওই হুমকি দেন ইরানের প্রতিনিধি।

নিজের অফিসিয়াল টুইটার পেজে দেয়া এক পোস্টে তিনি আরও বলেন, ‘নিজের অপরাধ থেকে অন্যের দৃষ্টিকে দূরে সরিয়ে রাখা এবং ভীতি ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে বিশ্বজনমতকে ধোঁকা দেয়ার ক্ষেত্রে প্রতারকদের দু’টি গুরুত্বপূর্ণ কৌশল।’ 

আল-জুবায়েরকে উদ্দেশ করে গরিবাবাদি আরও বলেন, ‘নিজের অপরাধী কার্যকলাপের দায় অন্যের ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করবেন না।’

এদিকে, পর্যবেক্ষকরা বলছেন- ইরানের শান্তিপূর্ণ পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে সৌদি আরবের অপপ্রচারের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে- এসব অভিযোগের আড়ালে তারা আসলে নিজেদের পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচির বৈধতা দেয়ার চেষ্টা করছে। যা এ অঞ্চলের নিরাপত্তাকে হুমকিগ্রস্ত করে তুলেছে। 

এ বিষয়ে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা বা আইএইএ’র পরিদর্শক দলের সাবেক প্রধান আওয়ালি হাইনান বলেছেন- ‘সৌদি সরকারের পরমাণু কর্মসূচিতে কোনও ধরনের স্বচ্ছতা নেই। যেমন- তারা এখনও আইএইএ’র সম্পূরক প্রটোকলে সই করেনি। কয়েকটি পরমাণু রিয়েক্টর ছাড়া এ বিষয়ে রিয়াদ আর কি কি করছে- সে ব্যাপারে আমাদের কারোরই সুনির্দিষ্ট কোনও তথ্য জানা নেই।’

গত আগস্টে নিউইয়র্ক টাইমস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, ‘সৌদি আরব তার ভূখণ্ডের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের প্রত্যন্ত একটি এলাকায় পরমাণু স্থাপনা তৈরি করেছে, যার একটিতে ইয়েলো কেক তৈরি করা হতে পারে।’

দুই বছর আগে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান একটি পরমাণু রিয়েক্টরসহ সাতটি পরমাণু কেন্দ্র উদ্বোধন করেন। তিনি সিবিএস নিউজ চ্যানেলকে দেয়া সাক্ষাতকারে দাবি করেন, তার দেশ পরমাণু বোমা বানানোর চেষ্টা করছে না। কিন্তু ইরান যদি এ ধরনের পদক্ষেপ নেয় তাহলে সৌদি আরবও একই পদক্ষেপ নেবে। 

আইএইএর তৎকালীন প্রধান ইউকিয়া আমানো তার দায়িত্বের শেষের দিকে বলেছিলেন, পরমাণু রিয়েক্টরে জ্বালানি ভরার আগে সৌদি আরবকে অবশ্যই আইএইএর পরিদর্শকদের পরিদর্শনের অনুমতি দিতে হবে।

এ অবস্থায় সৌদি আরব কেন হঠাৎ করে বিচলিত হয়ে পড়েছে এবং কেনই-বা ইরানের পরমাণু তৎপরতার বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছে সেটাই বড় প্রশ্ন। তবে এর সঙ্গে এ অঞ্চলে মার্কিন প্রভাব দুর্বল হয়ে পড়ার একটা সম্পর্ক রয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। সূত্র- ইরনা ও পার্সটুডে।

আরো পড়ুন