আলমগীর হোসেন >> মানবিক সাহায্যে ও ক্যারিয়ার গঠনে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন বাংলাদেশ স্টুডেন্ট এসোসিয়েশন অব নিউইয়র্ক। দুস্থ মানুষকে সহযোগিতা, দেশ থেকে আসা নবাগত ছাত্রদের অধ্যায়ন ও কর্মসংস্থান ব্যবস্থা করছেন যুগেরও বেশী সময় ধরে। মানুষের অধিকার আদায়ে নাগরিক অধিকার আন্দোলনে রাজপথে শ্লোগান তুলেছেন বহুবার।
পৃথিবীর রাজধানীখ্যাত নিউইয়র্ক নগরীতে তরুন প্রজন্মকে মূলধারার রাজনীতিতে সম্পৃক্ত করতে তাদের অবদানও কম নয়।
২০১১ সাল থেকে আমেরিকায় এবং বাংলাদেশে সমাজ সেবায় জড়িয়ে পড়েন এসোসিয়েশনের কর্মকর্তারা। সুবিধা বঞ্চিত মানুষের কথা চিন্তা করে সেচ্ছায় মানব সেবা সংগঠন তৈরি করেন। ২০২০ সালের মে মাসে নিউইয়র্ক স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে নন প্রফিট সংস্থা হিসাবে সনদ পত্র লাভ করেন সংগঠনটি।
কয়েক হাজার আমেরিকান বাংলাদেশী ছাত্র এই সংগঠনের যুক্ত রয়েছেন। চালিয়ে যাচ্ছেন নানান সামাজিক কার্যক্রম।
প্রতি বছর মাতৃত্বের টানে পালন করেন স্বাধীনতা দিবস, বিজয়দিবস, একুশে ফেব্রæয়ারিসহ জাতীয় দিবসগুলো।
ঘনঘটা করে উদযাপন করেন নববর্ষ। ভোটার রেজিষ্ট্রেশন, পার্ক পরিস্কার, খাদ্য সহায়তা, রক্তদান কর্মসূচীসহ একাধিক কর্মসূচী পালন করেছেন তারা।
সম্প্রতি কোভিট ১৯ এ ছাত্রদের সমন্বয়ে ফান্ডিং করে প্রায় ১০ লাখ টাকার নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সমগ্রী বিতরন করেন নিউইয়র্কের পাঁচ বোরোতে। প্রায় সাড়ে ৫ শ পরিবারের মাঝে ত্রান সহায়তা দেয়া হয়।
স্টুডেন্ট এসোসিয়েশনের সাবেক সদস্য তুহিন আলির ব্রেইন ক্যানসার চিকিৎসার্থে প্রায় ৩০ লাখ টাকার আর্থিক সহায়তা দেন এই সংগঠন।
বাংলাদেশে বিভিন্ন দূর্যোগে এবং সম্প্রতি সাইক্লোনে ক্ষতি গ্রস্থদের মাঝে ত্রান সহায়তা প্রদান করেন। দরিদ্র চালকদের ৪ টিভ্যান প্রদান করেন। খুলনা বøাডব্যাংক অনল দ্রোহি হাসপাতালে কোভিট ১৯ রোগীদের চিকিৎসার্থে অক্সিজেন সহায়তার জন্য ফান্ড রেইজিং শুরু করেছেন। ইতিমধ্যে প্রায় ১ লাখটাকা এই তহবিলে সংগৃহীত হয়েছে। মোটা অংকের একটি তহবিল সংগ্রহ করে অচিরেই পৌঁছে দেয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
নিউইয়র্কে মেধা উন্নয়নে বাংলাদেশী মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের স্কলারশিপ দেয়া শুরু করেছেন। বিগত বছরে ৭ জন ছাত্র-ছাত্রীকে স্কলারশিপ দেয়া হয়েছে।
ছাত্রদের পড়ালেখার মান উন্নয়ন ও সেচ্ছাসেবা দান কর্মসূচিতে অংশ গ্রহন করে সমাজ সেবায় ব্রত হওয়ায় আমেরিকার কংগ্রেস ও স্টেট সিনেট অফিস থেকে ২৪৫ জন ছাত্রছাত্রীকে প্রসংসা প্রত্রের ব্যবস্থা করেন। এতে করে ছাত্রছাত্রীরা সমাজকর্মের প্রতি ব্যাপক উৎসাহ বোধ করেন। ভবিষ্যতে এ সব ছাত্ররা অনায়াসে সমাজ সেবায় অবদান রাখতে পারবেন।
ছাত্ররা গ্র্যাজুয়েশন শেষ করার পর পরই তাদের প্রফেশনাল রেজুমি তৈরি করে দেয়া হয় যাতে ভাল চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে রেজুমিটি সহায়ক ভূমিকা পালন করে। এ ছাড়া এই সংগঠনের সমন্বয়ে প্রতিবছর জব সেমিনার, পিয়ার মেন্টরিং , ইয়ূথ কনভেনশনকরাহয়। এ সব সেমিনারে ক্যারিয়ার গঠনে দিক নির্দেশনা দেয়া হয়। ইতিমধ্যে প্রশিক্ষন প্রাপ্তহয়ে ২৩ ছাত্র-ছাত্রী আমেরিকার বিভিন্ন স্টেটে চাকরি করছেন সুনামের সাথে।
দেশ থেকে যারা নতুন আসছেন তারা এই সংগঠনের মধ্যে দিয়ে ক্যারিয়ার গঠনে সফল দিক নির্দেশনা পেয়ে থাকেন এবং তাদের দেয়া হয় ইংরেজি বলার প্রশিক্ষন সহ বিভিন্ন টেকনিকাল কারিগরি প্রশিক্ষন দেয়া হয়।
বিভিন্ন নাগরিক আন্দোলনেও ছাত্রদের পাশে দাঁড়িছেন বাংলাদেশ স্টুডেন্ট এসোসিয়েশন অব নিউইয়র্ক।
সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও বর্তমান সভাপতি শেখ আল আমিন জানান, জনসেবার উদ্দেশ্যে ইসংগঠনটি তৈরি করছি। আমাদের সাধ্যমত যে কোন মানুষের উপকার করার চেষ্টা করছি। ভবিষ্যতে আমাদের সেবারকার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। সব মিলিয়ে অত্যন্ত সুনামের সাথে মানব সেবার প্রিয় সংগঠন হিসাবে কাজ করছে সংগঠনটি।