যাদের পদচারনায় এক সময় মুখরিত ছিল নিউইয়র্কের জনপদ। আজ তারা নেই। গেল বছর ২০২০ নিউইয়র্কে বাংলাদেশী কমিউনিটির পরিচিত মুখ গুলো অকালেই ঝরে গেছে। নতুন বছরের শুরুতে তাদের থাকবেনা কোন শুভেচ্ছা বার্তা। স্মৃতির পাতায় তাদের নাম লেখা হয়ে গেছে। কিন্তু তারা কর্মগুণে বহু কাল বেঁচে আছেন মানুষের হ্রদয়ে।
২০২০ সালের মার্চের শুরু থেকে এ পর্যন্ত কয়েকশ বাংলাদেশী করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরন করেন। তাজা প্রাণ গুলো এ ভাবে ঝরে যাবে কেউ কল্পনাও করেনি। ভয়াল করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে বাড়িতে ফিরেছেন কয়েক হাজার বাংলাদেশী। এখনো এই ভাইরাসে বিছানায় পড়ে ভূগছেন তার কোন হিসেব নেই। কবে এর শেষ হবে তাও কেউ জানেনা।
বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি কামাল আহমেদ। মানুষের সুখ দুঃখে সব সময় কমিউনিটির মানুষের পাশে ছিলেন। ভাইরাস করোনায় চলে গেলেন না ফেরার দেশে। তাকে আর কখনো দেখা যাবেনা স্বশরীরে। তার মহৎ কর্মকান্ড স্মৃতি চারনে আলোচনায় থাকবে বহুকাল।
আজাদ বাকির তিনিও ছিলেন একাধারে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতা। সর্বশেষ বাংলাদেশ সোসাইটি থেকে সহ সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ছিলেন। করোনায় তিনিও চলে গেলেন।
আবদুল খালেক, তিনি ছিলেন বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক নেতা ও সর্বশেষ সোসাইটির নির্বাচনে সহসভাপতি পদপ্রার্থী ছিলেন। হঠাৎ তার খবর আসে তিনিও চলে গেছেন না ফেরার দেশে। কিংকর্তব্য বিমূঢ় হয়ে যান কমিউনিটির লোকজন। একের পর এক নেতৃত্বদানকারী সমাজকর্মীদের মৃত্যুর খবরে শোকে মূহ্যমান কমিউনিটির লোকজন।
আলোকচিত্র সাংবাদিক স্বপন হাই। কমিউনিটির বিভিন্ন সভা সেমিনারে নিয়মিত দেখা যেত। ক্যামেরা নিয়ে ছবি তুলতেন সব সময়। প্রথম আলো, আজকালে কাজ করেছেন দীর্ঘদিন। তাকেও প্রাণ হারাতে হয়েছে করোনা ভাইরাসে। গোটা সাংবাদিক সমাজ তার মৃত্যুতে শোকে কাতর হয়ে পড়েন।
তরুন উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ী মির্জা হুদা তিনিও চলে গেলেন করোনা ভাইরাসে। রেখে যান স্ত্রী ও দুটি ফুট ফুটে শিশু। পিতার জন্য শিশুদের আতœচিৎকারে আকাশ বাতাশ ভারী হয়ে উঠে। অকালে ঝরে যাওয়ার বেদনা মাথায় নিয়ে ঘুরছে পরিবারের লোকজন।
চট্টগ্রাম সমিতির সভাপতি আবদুল হাই জিয়া। তিনিও চলে গেলেন অল্প বয়সে। তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে কমিউনিটিতে শোকের ছায়া নেমে আসে।
বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি পদপ্রার্থী কাজী আশরাফ হোসেন নয়ন বলেন, করোনা ভাইরাসে আমরা কমিউনিটির শত শত প্রতিভাবান মানুষকে হারিয়েছি। এই বেদনা কোনদিন ভুলার মত নয়। আমরা চাই যারা চলে গেছেন তারা পরপারে যেন শান্তিতে থাকেন।
বাংলাদেশ সোসাইটির ট্রাষ্টি বোর্ড সদস্য অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন বলেন, এই ভাইরাসে আমরা যাদের হারিয়েছি তা কমিউনিটির জন্য অপূরনীয় ক্ষতি। ভবিষ্যতে যেন আর কাউকে হারাতে না হয় সেজন্য সবাইকে সিটির আইন মেনে চলার জন্য আহবান জানান।