বাংলাদেশ সোসাইটির স্থগিত হওয়া নির্বাচন অনুষ্ঠানে আইনি কোন আর বাধা নেই। বাধা আছে অদৃশ্য শক্তির হাত। এই শক্তির সাথে সমন্বয় করতে পারলেই যে কোন সময় নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময়ক্ষন নির্ধারিত হতে পারে। ২৭ হাজার সাধারন ভোটারের বিপুল পরিমান অংশ চান সময় ক্ষেপন না করে অচিরেই নির্বাচনের ব্যবস্থা করা।
২০১৮ সালের অক্টোবরে আদালতের নিষেধাজ্ঞায় স্থগিত হয়ে যায় বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচন। নির্বাচনে প্রতিদ্ব›িদ্ব প্রার্থী কাজী নয়ন প্যানেলের আলি আকবর চৌধুরি ও লিটু চৌধুরির নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রার্থীতা বাদ করে দেয়ার প্রতিবাদে আদালতে শরনাপন্ন হন। আদালত তাৎক্ষনিক ভাবে নির্বাচন স্থগিত করে দেন।
পরবর্তীতে আদালতের বিচারক দুই প্রার্থীর কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তলব করেন। দুই প্রার্থী আদালতের কাছে কাগজপত্র দাখিল করলেও তা গ্রহন যোগ্য হয়নি।
পুনরায় ৬ মার্চ আদালতের কাছে দুই প্রার্থী আকবর ও লিটু কানেকটিকাট থেকে নোটারি করা কাগজপত্র দাখিল করেন। কিন্তু আদালত দ্বিতীয়বারও তা গ্রহনযোগ্য বলে বিবেচনা করেননি। ফলে দুই প্রার্থীর নির্বাচনে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করার বৈধতা হারিয়েছেন।
যার ফলে বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচন অনুষ্ঠানে আদালতের আর কোন বাধা রইল না।
বাংলাদেশ সোসাইটির প্রধান নির্বাচন কমিশনার জামাল আহমেদ জনি বলেন, এখন আর নির্বাচন পরিচালনা করতে আইনি ভাবে কোন প্রকার বাধা নেই। তবে কোভিট ১৯ এর কারনে নির্বাচন পরিচালনা করাটা দুরহ বলে মনে করেন তিনি। কোভিট ১৯ এর মধ্যে সিটির সকল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা নিউইয়র্ক সিটি লকডাউন থেকে দ্বিতীয় তৃতীয় ধাপে খোলার পর নির্বাচনের অনুষ্ঠানের জন্য বিভিন্ন স্কুলে যোগাযোগ করেছি। স্কুল কতৃপক্ষ জানিয়েছেন পরিস্থিতি পুরোপুরি ঠিক না হওয়া পর্যন্ত স্কুলে জায়গা দিতে সংশ্লিষ্ঠ কতৃপক্ষ অপারগতা প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশ সোসাইটির সদস্য আসাদুর রহমান বলেন, সিটিতে এখন আর লকডাউন নেই। সব কার্যক্রমই চলছে। সিটির নির্বাচনও অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচন কমিশন চাইলে যে কোন সময় নির্বাচন দিতে পারেন। কিন্তু কোন অদৃশ্য হাতের ইশারায় নির্বাচন হচ্ছেনা তা আমাদের বোধগম্য নয়।
নয়ন আলী প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী কাজী নয়ন ও সাধারন সম্পাদক প্রার্থী মোহাম্মদ আলি নির্বাচনে অংশ গ্রহন প্রসঙ্গে বলেন, আমরা নির্বাচনে অংশ গ্রহন করতে সদা প্রস্তুত। মোহাম্মদ আলি আরো বলেন, কোভিটের কারনে যদি নির্বাচন করতে বিলম্ব হয় তাহলে সংশ্লিষ্ঠ প্রতি যে কোন ধরনের সমাঝোতার পথ বের করতে অনুরোধ জানান।
বাংলাদেশ সোসাইটির অপর সদস্য আহমেদ হোসেন বলেন, নির্বাচন হওয়া জরুরী। কারন নির্বাচনে না হওয়ার কারনে বর্তমান কমিটির সাংগঠনিক কর্মকান্ড তেমন একটা নেই বললেই চলে।
বর্তমান কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবদুর রহিম হাওলাদার বলেন, কোভিটে আমারা একশ এর বেশী লাশ দাফনে সহযোগিতা করেছি। মানুষের হাতে পৌঁছে দিয়েছি নিত্য প্রয়োজনীয় গ্রোসারি সামগ্রী। যে কারো সমস্যা থাকলে আমাদের কাছে আসলে আমরা সাধ্যমত সহযোগিতা করার চেষ্টা করবো।
অপর প্যানেল রব রহুল পরিষদের সভাপতি আবদুর রব মিয়া নির্বাচনে অংশ গ্রহন প্রসঙ্গে বলেন, এখনো কোভিট ১৯ চলছে। এই মুহুর্তে সব ভোটারদের নির্বাচন কমিশন অংশ গ্রহন করতে পারবেন কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন। নির্বাচনের আগে কিভাবে নির্বাচন হবে তা নিয়ে সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবি, ভোটার ও সচেতন মহলকে নিয়ে মতবিনিময় করা দরকার। কারন এখানে মানুষের সেফটি জড়িত এবং বিগত দুই বছরে অনেকের ঠিকানাও বদল হয়ে গেছে। সব মিলিয়ে নির্বাচন কমিশন কি ব্যবস্থা নেবেন তার উপর নির্ভর করছে নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়ার বিষয়টি। সবশেষে পরিস্থিতি ভাল থাকলে নির্বাচনে অংশ নিতে তার কোন আপত্তি নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দি¦ প্রার্থীর জেদাজেদির কারনে সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ২৭,৫১৩ জন ভোটার বানানো হয় এই নির্বাচনে। তবে এদের মধ্যে ব্যক্তিগত অর্থায়নে ভোটার হয়েছেন অনেকেই। যার কোন প্রার্থীর প্রভাবে ভোটার হননি। প্রার্থীরা জয়ী হতে হলে এসব ভোটারের ব্যালট আগামী নির্বাচনে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে বলে নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা মনে করেন।